ঢেউ শুধু ঢেউ
ঢেউ এসে বারবার নুন
মাখিয়ে যাচ্ছে ওদের শরীরে
তবুও প্রতিটা ফেনায় ফিরে
যাচ্ছে বিষণ্ণতা
লোনা হাওয়ায় কিছুটা রক্ত
আর নখের দাগের স্মৃতি
তাকে তুমি প্রেম বোলো না?
বরং বিপণ্ণতা বলো।
ঢেউ শুধু ঢেউ
আলো ক্রমে শেষ হয়ে আসে
শরীর জুড়ে অনেকটা অন্ধকার
সব জ্ঞান আর শাশ্বত
ভাবনারা
আকাশপ্রদীপ জ্বলে ওঠার
প্রতীক্ষায়।
ঠিক যেমন যীশুর শিষ্যরাও
ছিল অপেক্ষায়
রেজারেকশনের পরে নতুন
কিছু ঘটবে- এই আশায়।
আরেকটুকরো রুটি অথবা একটু
বাড়তি মদ পেলেই
ঈশ্বরের অস্তিত্ব কি
নিশ্চিত হতো?
নববিবাহিতা বধূ তার সমস্ত
ব্যর্থ রহস্য
আর ফুলের বিছানায় খুলে
রাখা গয়নায়
প্রেমিকের বিষণ্ণতা গিলে নেয়।
এভাবেই রাত বাড়ে।
অনন্ত আকাশে অজস্র
নক্ষত্রের আনাগোণা
আলোকে মুক্ত করে দেয়
সমস্ত গ্রহহীন তারা
তবুও ঢেউ ও বালি একদিন
পরস্পরের শত্রু হয়ে উঠেছিল
যেমন ইতিহাস ও স্মৃতির
গায়ে লেগে আছে শ্রেণীশত্রু
অথবা প্রোলেতারিয়েত গন্ধ।
যেন নিউক্লিয়ার অস্ত্রের
ফরম্যুলা আর প্রেসিডেন্টকে লেখা আইনস্টাইনের চিঠি-
‘প্লিজ ডোন্ট ইউজ ইট’।
সমুদ্রস্নান থেকে শুরু
হয়েছিল যে যুদ্ধ
সব নষ্ট হওয়া ডিমের খোঁজে
লাল কাঁকড়াদের
ক্রমে গর্তে ঢুকে পড়া
সমুদ্রফেনায় লেগে থাকা
মধুচন্দ্রিমা যাপনে
ছোটো ছোটো ক্ষয়ের চিহ্ন
পাড় জুড়ে।
দেশ থেকে দেশ, ঘর থেকে ঘর
খোঁজার
সব নিরীহ গল্পেরা আসলে
নিরস্ত্রই ছিল।
কাহিনীতে কিছুটা নশ্বরতা
কিছুটা মৃত্যু
আর কিছুটা কান্না লেগে
থাকলে
কুয়াশার মুখ মুছে মাথার
ওপর জেগে ওঠা সূর্যই
হয়ে ওঠে আধুনিক সভ্যতার
প্রতীক
তবুও বিরামহীন ঢেউ এসে
আছড়ে পড়ে
বালিমাটি ভিজে যায়...
No comments:
Post a Comment